নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জিজ্ঞাসাবাদে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী সেগুলোর সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট ডেলিভারি, অর্থের বিনিময়ে ভুয়া করোনা টেস্ট রিপোর্ট প্রদানকারী জেকেজি গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে তেজগাঁও থানা পুলিশ। রোববার (১২ জুলাই) বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এর আগে দুপুরে তাকে তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিসি হারুন বলেন, ‘আমরা আজকে যখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলাম, আপনি জেকেজি’র চেয়ারম্যান কি-না? উনি বললেন, না আমি কখনোই চেয়ারম্যান না। আমি বললাম, আমরা যেদিন দুজনকে গ্রেপ্তার করলাম, এর আগেরদিন আপনাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। এছাড়া কলেজে একটা ঘটনা ঘটার পর আপনি জেকেজি’র পক্ষে কথা বললেন চেয়ারম্যান হিসেবে। তিনি বললেন, আমার হাজবেন্ড এটা বলতে বলছে। তারপর ওনাকে আরও প্রশ্ন করা হলো, উনি সদোত্তর দিতে পারেন নাই। যার কারণে ওনাকে আমরা গ্রেপ্তার দেখিয়েছি।’
ডিসি হারুন আরও বলেন, মামলার তদন্তের জন্য তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাইবে পুলিশ।
ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। তবে তিনি গণমাধ্যমে নিজেকে জেকেজির ‘চেয়ারম্যান নয়’ বরং প্রতিষ্ঠানটির ‘কোভিড-১৯ বিষয়ক পরামর্শক’ দাবি করেছেন। তবে পুলিশের তদন্ত বলছে, সাবরিনাই জেকেজির চেয়ারম্যান।
ডিসি হারুন বলেন, ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জেকেজি গ্রুপের মুখপাত্র হিসেবেও নিজেকে ইতোপূর্বে উপস্থাপন করেছেন। একজন চাকুরীরত সরকারি কর্মচারী হিসেবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্বপালন করতে পারেন কি না- তাও তদন্তে বের হয়ে আসবে।
এছাড়া প্রথম আসামী হুমায়ুন কবীরকে গ্রেপ্তারের পরপরই তড়িঘড়ি করে ব্যাকডেটে ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ আরো ২ জন আসামীকে জেকেজি গ্রুপ থেকে অপসারণ করা হয়- যা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
সম্প্রতি ভুয়া করোনা রিপোর্ট তৈরির জন্য আরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানতে পারে, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনার টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনার আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তারের পরেই শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের ডা. সাবরিনা আরিফ চোধুরীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।